আরিফ গাজী :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী বারজন প্রশিক্ষণার্থী উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা অভিষেক দাশের কাছে ওই লিখিত অভিযোগ দেয়। ইউএনও অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেও এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত তিনি কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেনি।
১২ জন প্রশিক্ষাণার্থীর দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতাধীন ২০২১-২২ অর্থ বছরে ‘তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’র অধীনে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষন দেয়া হয় ২শ ৮৯ জনকে। যা গত ১৪ই মার্চ ২০২২ ইং তারিখ সম্পূর্ণ হয়।
তাদের মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ধার্য ছিলো ৬ হাজার এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ১২ হাজার টাকা। কিন্তু প্রশিক্ষন শেষে টাকার চেক আনতে গেলেই মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়াকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা। তাছাড়াও প্রশিক্ষন চলাকালিন সময়ে বিভিন্ন অযুহাতে একশ থেকে তিন’শ টাকা নিতেন অফিস খরচ দেখিয়ে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ রয়েছে যে, তার চাহিদা মতো টাকা না দেয়া প্রায় ১শ ৮০ জনের ভাতার চেক সে এখনো হস্তান্তর করছে না। এই বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষনার্থী তার সাথে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে তাদের কে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন শাহিন আক্তার মায়া।
এই বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম, বলেন, ‘আমরা একসাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন ও ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২শ জন। যারা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি তাদের কাছ থেকে আমাদের চেয়ারম্যান মায়া মেডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়ে পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিছে। আর যারা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদেরকে বলা হইছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যান মেডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি সকলকে ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান মেডাম নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বলছে যারা টাকা দিবিনা তাগরে ইয়াবা দিয়া ধরাইয়া দিমু তখন বুজবি মজা।’
অভিযুক্ত মুরাদনগর উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তার মায়া মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ আনার সাহস করো হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, প্রশিকাষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব মুঠোফোনে বলেন, প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ের কোন সুযোগ নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।